Type Here to Get Search Results !

জীবনযাত্রায় করোনা প্রভাব এবং আমরা " - দেবাশীষ মজুমদার, উত্তর ২৪পরগণা

করোনা নামক ভাইরাস আমাদের জীবনে কতটা প্রভাব বিস্তার করেছে,তা নিয়ে জানতে চাইলে বেশিরভাগ মানুষই এনিয়ে বলতে পারবেন।কেউ বলবেন  করোনা ভাইরাস আমাদের জীবনকে শেষ করে দিলো আবার কেউ বলবেন অর্থনীতিকে।যুক্তির হিসাবে নয় সহজ সরল দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখলে আমরা মানতে বাধ্য যে শুধুমাত্র মানুষই নয় গোটা পৃথিবীর সমস্ত জীবকুলকে সমস্যার মুখে ফেলে দিয়েছে এই করোনা নামক মহামারী ভাইরাস।ছাএছাএীদের পড়াশোনা অনলাইনে,বেসরকারী কোম্পানীর কর্মী ছাটাই,শৈশব জীবনে মাঠে খেলাধূলা করবার মতো কোনও পরিস্থিতি নেই।কিন্তু আমরা যদি একটু সজাগ হয়ে করোনা ভাইরাসকে উপলব্ধি করি যে আমাদের জীবনে ও স্বভাবের নিয়মে তা কতটা প্রভাব ফেলেছে,তাহলে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরে আলোচনা করা যেতে পারে।

প্রথমত,স্যানিটাইজার  বিষয়টা বর্তমানে সকলের মুখে মুখে। করোনা নামক ভাইরাসের আগে সমাজের খুব অল্প সংখ্যক মানুষই এই বিষয়টা সম্পর্কে অবগত ছিল।শুধুমাত্র বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে তা সীমাবদ্ধ ছিলো।মাঝে মধ্যে কোন খাবার দোকানে গেলে পার্সোনাল ভাবে কিছু সচেতন মানুষ তা ব্যবহার করতেন।এবার সবাই করোনা ভাইরাসের কারনে স্যানিটাইজার এর গুরুত্ব বুঝবার চেষ্টা করেছে।

দ্বিতীয়ত,সরকারি নির্দেশ এবং প্রয়োজনে  বর্তমানে সবাই মাস্ক ব্যবহার করছেন।কিন্তু মাস্ক পড়বার বিষয়টা সম্পর্কে সমাজের বেশিরভাগ মানুষ  অনেক আগে থেকেই অবগত ছিলেন।কিন্তু ধুলো, নোংরা বা কোনরুপ ময়লার সম্মুখীন হতে হয়েছে তখনই সে তা ব্যবহার  করেছে।কিন্তু এবার আর ভুলে নয়,মানুষের স্বভাবে নিয়মের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে করোনার কারনে।

তৃতীয়, প্রতিযোগিতা আর প্রতিযোগিতা এই যুদ্ধের খেলা খেলতে খেলতে মানুষ ভীষনভাবে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলো।একটু কর্মের বিরতি চেয়েছিলো সে।অবসর সময়ে সৃষ্টিশীল প্রতিভা মেলে ধরতে চেয়েছিলো।তাই এখন এক নয় একাধিক সাংস্কৃতিক পেজ তৈরী হয়েছে।সেখানে সংগীত,নৃত্য,আবৃওি,সাহিত্য এর মত বিভিন্ন বিষয়ে তুলে ধরার কাজে সচেষ্ট হয়েছে সবাই।শুধুমাএ তাই নয়,প্রতিভাকে সম্মান জানানোর জন্য তৈরী হয়েছে পুরস্কার দেবার ব্যবস্থা।সময়টাকে  ফালতু ভাবে নয়,সঠিক ব্যবহার করবার একমাত্র মাধ্যম করে দিল করোনা ভাইরাস।

চতুর্থ, বিজ্ঞানের হাত ধরে মানুষ হয়েছে আধুনিক।এখনকার শিক্ষার্থীরা আর মাঠে খেলাধূলা করে না।তারা নামিদামি মোবাইলে কিংবা কম্পিউটারে অনলাইন গেম খেলে।কিন্তু করোনার কারনে সেই গেম বন্ধ হয়েছে,বর্তমান সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে তারা অনলাইনে পড়াশোনা করতে বাধ্য হয়েছে সরকারী নির্দেশে।মেধা মননের বাস্তব উপযোগী শিক্ষার কারন একমাত্র করোনা ভাইরাস।

পঞ্চম, মাংস না হয় মাছ, বিরিয়ানী  না হয় বিদেশী খাবার।এই নিয়ে মানুষের মধ্যে একটা জেদ ছিলো।কিন্তু করোনা নামক ভাইরাস এসে মানুষের  বিলাসী জীবন যাপনে রাশ টেনেছে।তাই সাধ্যমত খাবার খেতে হবে পেট ভরে,সবার মত করে।নিজের ইচ্ছায় নয়।জীবনে মানসিকতা সঠিক রাখা  কতটা দরকার,বুঝিয়ে দিল করোনা ভাইরাস।

ষষ্ঠত, পাশের বাড়িতে কারোর শরীর খারাপ হলে,আমার তাতে কী?মানুষের মধ্যে এই একটা নোংরা মানসিকতা চলে এসেছিলো বহুদিন ধরে।মনুষ্যত্ব ও আন্তরিকতা বোধ অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছিলো প্রায়।কিন্তু করোনা আবহে মানুষের মধ্যে মানবিকতা ও দায়বদ্ধতা ভীষন ভাবে চোখে পড়েছে।তাই নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী একে অপরের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।

তবে এই করোনা নামক ভাইরাস একটা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে নেই,কোন বয়স,ধর্ম,স্থান মানছে না।আমরা আশা রাখি বিজ্ঞানের হাত ধরে আমরা সকল মানবজাতি করোনা যুদ্ধে জয়লাভ করবো।মানবতা হবে শেষকথা,কোন ভয় নাই।সচেতনতা আর সাবধানতা বর্তমানে আমাদের বেঁচে থাকার একমাএ রাস্তা। 

দেবাশীষ মজুমদার
উত্তর ২৪পরগণা

১১ই আগস্ট ২০২০

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.