ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ড এক পরিবারে একটি দেয়ার কথা থাকলেও রয়েছে একাধিক। এমনকি বেশ সচ্ছল পরিবারও পেয়েছে। ডিলার পর্যায়েও মিলেছে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বিক্রির প্রমাণ। এতে সরকারি অর্থের অপচয় হলেও দায় নিতে নারাজ সংশ্লিষ্ট ডিলার ও কাউন্সিলর।
প্রশ্ন উঠতেই পারে কীভাবে বিক্রি হওয়ার কথা টিসিবির পণ্য; আর হচ্ছে কীভাবে? ফ্যামিলি কার্ডধারী ছাড়া কেন রাতের অন্ধকারে ভ্যানভর্তি টিসিবির পণ্য যায় কাউন্সিলরের অফিসে?
বুধবার (২৬ জুলাই) সংশ্লিষ্ট এক ডিলারের গোডাউনে গিয়ে যেন কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে এলো সাপ। একসঙ্গে মিললো ৩৪টি ফ্যামিলি কার্ড। যা কোনোভাবেই একজন ডিলারের কাছে থাকার কথা নয়। তাহলে এগুলো এখানে এলো কী করে?
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের টিসিবির ডিলার আজিজুল হাকিম রাজু সময় সংবাদকে বলেন, ‘লাইনে দুইদিক থেকেই দাঁড়ালে কাদেরকে দেবো? কাউন্সিলরের লোকজন তো আর দেরি করবে না। তাই তারা কার্ড দিয়ে পণ্য নিয়ে যায়। পরে এন্ট্রি করে কার্ড ফেরত নেন তারা। আর কার্ড এলে আমি পণ্য দিতে বাধ্য।’এরপর কাউন্সিলর কার্যালয়ের নিচে যেতেই দেখা গেল টিসিবির পণ্য কিনতে অপেক্ষা করছেন সুবিধাভোগীরা। যারা ভিষণ খুশি নিজেদের চাহিদা মতো ফ্যামিলি কার্ড পেয়ে। নিম্ন আয়ের একটি পরিবারে একটি কার্ড পাওয়ার কথা থাকলেও এখানে কী হয়েছে কার্ড তৈরি ও বিতরণে! যদিও ডিএসসিসির ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিকের ঝাড়া জবাব, কোনো অনিয়ম হয়নি তার ওয়ার্ডে। রাতের বেলায় তার অফিসে পণ্য আসার ব্যাখ্যাও দিলেন এই জনপ্রতিনিধি। সেই সঙ্গে জানালেন, ডাল-চাল ছাড়া নিজের ইচ্ছে মতো শুধু তেল বিক্রি করেছেন ডিলার।
তিনি বলেন, ‘এক পরিবার ৩ থেকে ৪টি কার্ড কখনোই পায় না। এক পরিবারে একটি নিয়মতান্ত্রিকভাবেই দিয়েছি। এখানে শুধু আমার একার স্বাক্ষর নয়, আমার জোনাল এবং সচিবের স্বাক্ষরও আছে। এমনও দেখেছি, এলাকার যারা লাইনে দাঁড়াতে পারে না, তাদের বাসা থেকে যুবকরা কার্ড এনে পণ্য পৌঁছে দেয়। এটা হচ্ছে জনসেবা।’
রতিটি ধাপেই দেখা যাচ্ছে, দায়িত্ব পালন করছেন সংশ্লিষ্ট সবাই অথচ নানা অনিয়মে অপচয়ের বোঝা ভারি হচ্ছে সরকারের কাঁধে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন আর কতোদিন চলবে এভাবে?
আরশিকথা বাংলাদেশ সংবাদ
তথ্য ও ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট
২৯জুলাই, ২০২৩