আবু আলী
আরশিকথা:
মিশরে ভ্রমনে ভিসা জটিলতা নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস।বেশকিছু দিন ধরেই ভিসা নিয়ে জটিলতায় ভুগছিলেন বাংলাদেশিরা।
বৃহস্পতিবার মিশরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী ইসমাইল খায়রাতের সাথে বৈঠক করেন। প্রথমেই রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য বিশেষ শর্তে অন এরাইভেল ভিসার সুবিধাটি মঞ্জুর করায় ধন্যবাদ জানান।
জানা গেছে, মিশরের আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে এবং ভ্রমন করতে আসা বাংলাদেশি পাসপোর্ট ধারীদের ভিসা পেতে দেরি হওয়া নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে অভিযোগ করছেন অনেক বাংলাদেশি।বিষয়টি কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বৈঠকে উভয়ে একমত হন, অন এরাইভাল ভিসা ব্যবস্থার কারনে উভয় দেশের মধ্যে পর্যটন ও বানিজ্যিক ভ্রমন বৃদ্ধি পাবে। এভাবে উভয় দেশের ভ্রাতৃত্ত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নততর হবে। অন্যান্য সাধারণ বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য রাষ্ট্রদূত ভিসা সহজিকরণের জন্য অনুরোধ করলে সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, এই ভিসা সাধারণত দুই সপ্তাহের বেশী লাগার কথা নয়। তিনি বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবেন বলে জানান।
ছাত্রদের ভিসার বিষয়ে সহকারী মন্ত্রী জানান, নিরাপত্তা ছাড়পত্র প্রাপ্তির জন্য কিছু সময় লাগে বিধায় এই ভিসা প্রাপ্তিতে অন্তত দুই মাস সময় লাগে।
রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আরো বলেন যে, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বানিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবিলম্বে গ্রহন করা দরকার। তারা উভয়ে একমত হন যে, ভিসা সহজিকরণ এবং কায়রো-ঢাকা সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ার মাধ্যমে দুই দেশের সুসম্পর্ক নতুন ভাবে গতি লাভ করবে।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দুতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) মুহাম্মদ ইসমাইল হোসাইন।রাষ্ট্রদূতের অনুবাদক, ফাহিম আহমাদ। ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মিশরের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশী ছাত্রদের একমাত্র সংগঠন, বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশনের সাধারণ সম্পাদক, সাইমুম আল-মাহদী।
সহকারী মন্ত্রীর কাছে, বাংলাদেশী ছাত্রদের উচ্চ শিক্ষা অর্জনে, মিশরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এডমিশনে, ভিসা সহজিকরণের দাবি উপস্থাপন করা হয়। বিশেষ করে, আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে, বাংলাদেশ থেকে স্কলারশিপ প্রাপ্ত, গত দুই সেশনের ছাত্রদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জটিলতা ও ভিসা প্রাপ্তীতে বিলম্বের কারণে এখনো তারা মিশরে আসার সুযোগ পায়নি। তাদের স্কলারশিপের ডকুমেন্টসগুলো সরাসরি প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের নিকট তুলে ধরা হয়। তিনি অচিরেই এর সমাধানকল্পে কার্যকরী ভূমিকা পালনের আশ্বাস দেন।
ছাত্র প্রতিনিধির পক্ষ থেকে, মিশরে পড়তে চাওয়া প্রাইভেট স্ট্যাডির ছাত্রদের ভিসা প্রাপ্তীর ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপের বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়। এ সময় রাষ্ট্রদূত মুনিরুল ইসলাম বলেন, মিশরের আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া অথবা বৃত্তি পাওয়া বাংলাদেশী ছাত্রদের একটা স্বপ্নের মতো। এবং আল-আযহারের গত সেশনগুলোর পরীক্ষার ফলাফলে, বাংলাদেশী ছাত্রদের সাফল্য তুলে ধরেন। সহকারী মন্ত্রী মহোদয়, খুবই বিস্মিত হন।
সেই সাথে সাধারণ নাগরিকদের দ্রুত ভিসা প্রাপ্তির দাবিও জানানো হয়। তিনি দুই সপ্তাহের মাঝে ভিসা প্রস্তুতের ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত মহোদয় , বাংলাদেশীদের জন্য বিশেষ শর্তে অন এরাইভেল ভিসা ও বানিজ্যিক সুবিধা, টুরিজম ইস্যুতে মিশরের কার্যকরী ভূমিকার জন্য প্রশংসা করেন। কায়রো টু ঢাকা সরাসরি এয়ারলাইন্স দ্রুত চালুকরনের ব্যাপারেও মন্ত্রী মহোদয় আশ্বাস দিয়েছেন।
আরশিকথা বাংলাদেশ বিভাগ
২৫শে নভেম্বর ২০২২