Type Here to Get Search Results !

MAY DAY....আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস


"Voltare said- Workers of the world unit you have nothing to loose except your change but a big world to win. These word not to show pretty to the working class but to remind them that they are been denied of their basic rights. The working class finally revolted and it paid off. May One become a day recognized to around the world as a working class Holiday....a day of solidarity between workers of All Nationalities."
মহান মে দিবস। বিশ্বের সব অংশের মেহনতি মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ইতিহাস। আর শ্রমজীবী মানুষের ঘাম-রক্ত-মুল্য-অধিকার আদায়ের স্মারক দিবস। শ্রমিকদের শোষণ বঞ্চনার হাজার বছরের ইতিহাস নিয়ে দিনটির প্রেক্ষাপট শুরু হয়েছিলো এবং এই শোষণ বঞ্চনা থেকে মুক্তিলাভের দায়িত্বপালনকারী প্রাণোচ্ছল শ্রমিকশ্রেণীকে মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার ন্যুনতম অধিকার প্রদানে বরাবরই কুণ্ঠিত ছিল তথাকথিত সভ্যসমাজ। বিভিন্ন অজুহাতে দিনরাত খেটে খাওয়া মানুষের অত্যাচার, নির্যাতন এবং তাদের শ্রমে ঘামে উৎপাদিত সম্পদের স্বপোষক করায়ত্ত করে নিজেদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিধানের রেওয়াজ চলে আসছিলো বছরের পর বছর ধরে। শোষিত বঞ্চিত মানবগোষ্ঠী পেটের দায়ে সবরকমের অন্যায় উৎপীড়ন মুখ বুজে সহ্য করে আসছিলো বিধাতার অমোঘ বিধানের মত। পয়লা মে এই চূড়ান্ত অনৈতিক রেওাজের বিরুদ্ধে শোষিত বঞ্চিত মানুষের ভয়ভীতিহীন উচ্চারণের দিন। লাগাতর আন্দোলন করে দাবি আদায়ের দিন। 

পয়লা মে' শ্রমিকের অধিকার রক্ষার দিবস। ১৮৮৬ সালের পয়লা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটে ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম-৮ ঘণ্টা বিনোদন- ৮ ঘণ্টা শ্রমদানের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর গুলি চালানো হলে ১১ জন শহিদ হন। ১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে একদল শ্রমিক দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজ করার জন্য আন্দোলন শুরু করে এবং তাদের এই দাবি কার্যকর করার জন্য শ্রমিকেরা সময় বেঁধে দেয় ১৮৮৬ সালের ১লা মে। কিন্তু কারখানার মালিকগণ এই দাবি মেনে নিলোনা। 
৪ঠা মে ১৮৮৬ সাল। হাল্কা বৃষ্টির মধ্যে শিকাগো শহরের হে মার্কেট নামক এক বানিজ্যিক এলাকায় শ্রমিকরা এক মিছিল করার উদ্দেশ্যে জড়ো হন। আগস্ট স্পিচ নামে এক শ্রমিকনেতা জড়ো হওয়া শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। তখন হঠাৎই অদুরে থাকা পুলিশ বাহিনীর মাঝে এক বোমা বিস্ফোরণ হয়। আর তাতেই এক পুলিশকর্মী নিহত হয়। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশবাহিনী জড়ো হওয়া শ্রমিকদের উপর তৎক্ষণাৎ অতর্কিতে হামলা শুরু করে। যা রায়টের রূপ নেয়। আর এতেই ১১জন শ্রমিক শহিদ হন। পুলিশ হত্যা মামলায় আগস্ট স্পিচ সহ ৮জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এক প্রহসনমূলক বিচারের পর ১৮৮৭ সালের ১১ নভেম্বর ৮ জনের মধ্যে ৬ জনের ফাঁসী কার্যকর করা হয়। বাকি দুজনের মধ্যে লুইস লিঙ্ক নামে একজন একদিন পর কারাগারের ভেতরেই আত্মহত্যা করে। অন্যজনের ১৫ বছরের কারাদণ্ড হয়। ফাঁসীর মঞ্চে শ্রমিকনেতা আগস্ট স্পিচ বলেছিলেন " আজ আমাদের এই নিস্তব্ধতা তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা একদিন অধিক শক্তিশালী হবে।"  
১৮৯৩ সালের ২৬শে জুন ইলিয়নের গভর্নর অভিযুক্ত ৮ জনকেই নিরপরাধ বলে ঘোষণা দেন এবং রায়টে হুকুম প্রদানকারী পুলিশের কম্যান্ডারকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে সেই বোমা বিস্ফোরণকারীর পরিচয় কখনই প্রকাশ পায়নি। শ্রমিক হত্যার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে দেশে দেশে। দুনিয়াব্যাপী শ্রমিকদের মুখ থেকে উচ্চারিত হয় অমর স্লোগান " দুনিয়ার মজদুর এক হও" । শ্রমজীবীদের এই সুদৃঢ় ঐক্যের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেন সব শিল্পপতিরা। ঐক্যবদ্ধ কর্মীদের আন্দোলনের সম্ভাব্য পরিণতির চিন্তায় আতঙ্ক জাগে শিল্পপতিদের মনে। অবশেষে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে তাদের ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস নির্ধারণ, ছুটিছাটা সহ অন্যান্য মৌলিক দাবিদাওয়া মেনে নেন মালিকগোষ্ঠী। সেই থেকেই ১লা মে শ্রমিকদের ঐক্য সংহতির স্মারক দিবস হিসেবে দেশে দেশে পালিত হয়ে আসছে।
কিন্তু শ্রমিকদের শোষণ বঞ্চনার কতটা অবসান হল তা কিন্তু আজও প্রশ্নচিনহের মুখে। সেই তেভাগা আন্দোলনের ভাগচাষীদের দৃপ্তকণ্ঠে সোচ্চারের ভাষায় " জান কবুল আর মান কবুল...আর দেবো না আর দেবো না রক্তে বোনা ধান মোদের প্রাণ হোক"- উচ্চারণে কতটা বলীয়ান...কতটা ঐক্যবদ্ধ শ্রমিকগোষ্ঠী সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খায় সাধারণে। 

ভাবনারা তো সবার ভেতরেই অবিরত ঢেউ তুলে চলেছে। শোষণ বঞ্চনা থেকে মুক্ত হবার লড়াই আগেও ছিলো আজও আছে এবং চলবেও। মনের ভেতরের আবদ্ধতা থেকে মুক্ত হওয়াটাই মূল কথা। নাহলে প্রিয় কবির ভাষায় বলতে হয় " কৃষিকরণ নাকি শিল্পায়ন দিন যায় নানান বিতণ্ডায়...যারা বাঁচতে চায় তারা অসহায় কেউ হন না তাদের সহায়" । তাই সব তর্ক বিতর্ক তত্ত্ব দূরে ঠেলে শৃঙ্খলহীন মুক্ত জীবনের ঢেউ উঠুক শিরায় শিরায়। 
আরশি কথা"র তরফে মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে দুনিয়ার সকল অংশের শ্রমজীবী মানুষের প্রতি রইলো সংগ্রামী অভিনন্দন ।। 

এডিটর কলাম, আরশি কথা
তথ্যঋণঃ ইন্টারনেট
ছবিঋণঃ ইন্টারনেট                                     

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.