কমলা হারিস ২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম মহিলা উপরাষ্ট্রপতি হন। ইন্দিরা জি'র জন্মবার্ষিকীতে আজ আমাদের বুঝতে হবে যে, ভারতের জনগণ আজ থেকে ৫০ বছর আগে একজন মহিলা কে অর্থাৎ শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীকে তাদের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বেছে নিয়েছিলন।
ইন্দিরা জি'র সাহস এবং শক্তি সর্বদা বিশ্বজুড়ে মহিলাদের অনুপ্রাণিত করবে।
অনেক সমস্যা, বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে উনি দেশের জন্য, দেশের গরিবের জন্য কাজ করেছেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যায় উনি দেশকে উন্নতির পথে নিয়ে যান। উনার নেতৃত্ব দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে খুবই উপযোগী ছিল, উনি সর্বদা জাতির স্বার্থে কাজ করে গেছেন।
স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে পন্ডিত নেহরু প্রায় ১০ বছর জেলেই ছিলেন, জেল থেকে মেয়ে ইন্দিরা কে লেখা নেহেরুর চিঠি ইন্দিরার রাজনৈতিক চিন্তাকে প্রভাবিত করেন।
ইন্দিরা গান্ধী যখন তার পড়া শেষ করে দেশে ফিরেন, তখন দেশের অবস্থা খুবই ভয়াবহ, ভারত ছাড় আন্দোলন শুরু হচ্ছিল, সমগ্ৰ বিশ্বজুড়ে তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়, উনার পিতা পান্ডির নেহরু সহ জাতীয় কংগ্রেসের সকল বড় বড় নেতা তখন জেলে ছিলেন।
দক্ষিণ ভারতেও তখন অস্পৃশ্যতার খুব প্রভাব, কিন্তু ইন্দিরা গান্ধীজি'র কাছে সবাই সমান ছিলেন তাই তিনি সব সময় বলতেন লাইনে থাকা সর্বশেষ ব্যাক্তিকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা দেওয়া উচিত তবেই দেশ উন্নত হবে।ততদিনে ইন্দিরা গান্ধী কংগ্রেসের হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে নেমে পড়েছিলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে অন্তরঙ্গ ভাবে জড়িয়ে পড়ার ফলে ইংরেজ সরকারের অধীনে প্রায় ১৩ মাস তাকে জেলে কাটাতে হয়।
১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হলে পন্ডিত নেহরু দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হলে সেই সময়টি ছিল ইন্দিরা গান্ধীর জন্য সবচেয়ে গর্বের মুহূর্ত। একই সঙ্গে সময়টি ছিল খুবই চ্যালেঞ্জিং কারণ দেশ স্বাধীন হয়েছিল ঠিকই কিন্তু ইংরেজ রা দেশ কে সম্পূর্ণ লোট-পাট করে চলে গেলেন।তখন লক্ষ একটাই ছিল কি ভাবে দেশের উন্নতি করা যায়।
পন্ডিত নেহরুর মৃত্যুর পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী জি'র আচমকায় মৃত্যু হলে তৎকালীন কংগ্রেস সভাপতি কে কামরাজ সিদ্ধান্ত নেন ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন ইন্দিরা গান্ধী। তখন একমাত্র ইন্দিরা গান্ধীই ছিলেন যে সম্পূর্ণ দেশের কথা ভাবছিলেন, দেশের জন্য কাজ করছিলেন।
ইন্দিরা গান্ধীর জন্য এই প্রধানমন্ত্রীর তাজটি ছিল কাটায় ভরা কোন কিছুই তার জন্য সহজ ছিল না, তা সত্ত্বেও তিনি যে ভাবে সবকিছু গুছিয়ে ছিলেন তা সত্যই প্রশংসনীয়।
ভারত তার সংষ্কৃতির জন্য সারা বিশ্বে বিখ্যাত ইন্দিরা গান্ধী ভারতের ও উত্তর পূর্বাঞ্চলের সংষ্কৃতি কে রক্ষা করার জন্য অনেক কাজ করে গেছেন।
১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জয় ও ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা ইন্দিরা গান্ধীর ব্যক্তিত্বকে ফুটিতে তুলে, এই যুদ্ধের পর অটল বিহারী বাজপেয়ী ইন্দিরা কে মা দুর্গা বলেছিলেন।
একের পর এক যুদ্ধের ফলে দেশের আর্থিক অবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিল, ধনিদের এসব নিয়ে কোন মাথাব্যথাই ছিল না, যত সমস্যা হত সবটাই হত গরিবদের এবং ইন্দিরা গান্ধী এটা খুব ভালো করে বোঝতেন, ইন্দিরা গান্ধী সমতায় বিশ্বাসী ছিলেন, তিনি সকল স্তরের মানুষে কে সমান চোখে দেখতেন, তিনি পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় "গারিবী হাটাও" এর স্লোগান দিয়েছিলেন এবং একে বাস্তবায়ন করতে তিনি প্রথম ২৬ তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে "Privy purse" বন্ধ করেন এবং সেই টাকা গরিবদের জন্য ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন।
অবশেষে ৩১ অক্টোবর, ১৯৮৪ তার নিজের দুই দেহরক্ষী দ্বারা তার হত্যা করা হয় তার নিজের বাড়িতে।
শ্রেয়সী লস্কর
সেক্রেটারি, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন
ত্রিপুরা প্রদেশ মহিলা কংগ্রেস
২০শে নভেম্বর ২০২০