Type Here to Get Search Results !

বিধায়কের আহ্বানে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে অরাজনৈতিক মিছিল ও সমাবেশ আগরতলায়

তন্ময় বনিক,আগরতলাঃ
# একজন রাজনৈতিক পোড় খাওয়া নেতা অরাজনৈতিক কর্মসূচী ডাকলেন। কর্মসূচী শেষ পর্যন্ত থাকলও অরাজনৈতিক।
# সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার।থেমে থেমে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি।আর মিছিল শুরু হতেই যেন প্রকৃতিদেবী সুপ্রসন্ন। আকাশে রোদের ঝিলিক।
# প্রতি বছর ২৩শে জানুয়ারিতে মানুষ আগরতলায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা প্রত্যক্ষ করেন। ২৩শে জানুয়ারির শোভাযাত্রা ব্যতিত এই প্রথম রাজ্যের মানুষ এমন সুবিশাল অরাজনৈতিক মিছিল প্রত্যক্ষ করলেন।একই ইস্যুতে বৈচিত্র্যের সমাহার এই মিছিলে।

# এক পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য - আজকের মিছিল অনেক সুশৃঙ্খল। মানুষের পায়ের আওয়াজও শোনা যায়নি। 
# এক পথচারীর বক্তব্য - আজকের মিছিল না দেখলে অনেক কিছু মিস করতাম। 
নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে মিছিল ও সমাবেশ ডাকেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ। প্রত্যক্ষভাবে তার সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক আশিস কুমার সাহা। শুক্রবার সকাল থেকেই মানুষের মধ্যে কৌতূহল এই মিছিল ও সমাবেশ নিয়ে।
বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মানুষ ব্যক্তিগত উদ্যোগে রবীন্দ্রভবনের সামনে জড়ো হন। সুদীপ রায় বর্মণ, আশিস সাহাদের সামান্য ভাষণের পর শুরু হয় র‍্যালি। বৈচিত্র্যে ভরা এই র‍্যালিতে ছিলো অনেক কিছু।

কেউ নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে গান গেয়ে এগিয়ে চলেছেন। তো কেউ কবিতার মধ্য দিয়ে প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পেয়েছেন। মিছিলে নতুন প্রজন্মের উপস্থিতি ছিলো লক্ষণীয়। গিটার হাতে নিয়ে গান গেয়ে মিছিলে হাটে একদল তরুণ।
র‍্যালিতে ট্যাবলুগুলিও এক গভীর অর্থবহ বার্তা নিয়ে আনে। দেশপ্রেম, একতাবোধ,নারীর সুরক্ষা, প্রতিবাদে গর্জে ওঠা, সচেতনতা - এসমস্ত ইস্যুর উপর ভিত্তি করেই ট্যাবলুগুলি সাজানো হয়। মিছিলের শেষপ্রান্ত যখন ওরিয়েন্ট চৌমুহনীতে অগ্রভাগ তখন পৌঁছে গিয়েছে আর এম এস চৌমুহনীতে। যতটা সংখ্যক লোক মিছিলে হেঁটেছেন তার চাইতে দ্বিগুণ সংখ্যক লোক রাস্তার দু'পাশে দাঁড়িয়ে মিছিল প্রত্যক্ষ করেছেন।মিছিলে অংশগ্রহনকারী নারী,পুরুষ, যুবাদের হাতে ছিলো নারী নির্যাতন বিরোধী নানা রকম বার্তা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড। কিশোর থেকে প্রবীণ-মানুষ যেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে নারী নির্যাতন ইস্যুতে প্রতিবাদী এই কর্মসূচীতে সামিল হয়েছেন।

সমাবেশে বিধায়ক শ্রী রায় বর্মণ নারী নির্যাতন ইস্যুতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একটা সময় ভাবুক হয়ে পড়েন। একটা সময় ভুল করেছেন- তা স্বীকার করেই বলেন বয়সের সাথে আমারও মন মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে।
তিনি বলেন, অনেকেই বলেছে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে এই কর্মসূচী। আশাকরি এখন তাদের দৃষ্টিভঙ্গিও বদলাবে।সোশ্যাল সাইটে অপপ্রচার না করারও আহ্বান জানান শ্রী রায় বর্মণ। তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে এখনও সচেতন হইনি। এটা বুঝতে গেলে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। কোনও সরকার বলে দেয় না অপকর্ম করার জন্য। মানুষকেই সচেতন হতে হবে।তবেই নারী নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব। নিজে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যকেও সচেতন করে তোলার আহ্বান জানান সুদীপ।
এদিনের সমাবেশে তার আহ্বান ত্রিপুরায় যেন সুন্দর পরিবেশ বজায় থাকে। একটিও যেন নির্ভয়ার মতো ঘটনা না ঘটে। " জয়হিন্দ " ধ্বনির মধ্য দিয়ে শ্রী রায় বর্মণ এদিন এই কর্মসূচীর সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

ছবিঃ সুমিত কুমার সিংহ

৩রা জানুয়ারি ২০২০

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.