নারীদিবস ২০২০ এবং ভারতীয় উপমহাদেশের নারীরা" --মৌসুমী ভট্টাচার্য,ওমান

আরশি কথা
আজ ২০২০ সালে দাঁড়িয়ে ভারতীয় নারী তথা এই উপনিবেশের মহিলাদের অবস্থান নিয়ে ভাবনা চিন্তার সময় এসেছেঅনেক নারীদের সফলতা যেমন দৃষ্টান্তমূলক,মনে আনন্দের  সাহসের সঞ্চার করে তেমনি মহিলাদের
প্রতি অত্যাচার,নিষ্ঠুরতা মনকে ভীত,আর্দ্র করে তোলেকথা হচ্ছে,এর কারণটি কিকেন এত হিংস্রতা,কেনই বা
অসহায়তা ! অত্যাচারিত মহিলাদের সংখ্যা উদ্বেগজনক ভাবে বর্ধিষ্ণু পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে,
এদের মধ্যে অনেকেই দুর্ভাগ্যবশতঃ পরিস্থিতির শিকার হয়েছে,যেখানে তারা আত্মরক্ষার ন্যূনতম সুযোগ পায় নিধর্ষণ আর খুনের ভয়াল চেহারা যে কোন পেশাদার হত্যাকারীর হাড় হিম করে দিতে পারেকিন্তু এক বিশাল
সংখ্যক মহিলাদের কাছে ভাল অপশন থাকা সত্ত্বেও তারা নিজেদের এক অসম্মানজনক পরিস্থিতিতে রেখে দেয়
এর থেকে বেরিয়ে আসার কোনরকম চেষ্টা করে নাভাগ্যের দোহাই দিয়ে এটাকে ভবিতব্য,প্রারব্ধ ইত্যাদি কঠিন
শব্দের বেড়াজালে নিজেদের মুড়ে আত্মপ্রবঞ্চনা করেআত্মপ্রবঞ্চনা’ বিষয়টিও এদের কাছে ধোঁয়াশা প্রতিনিয়ত
নিজেদের সুখী গৃহবধূর ফ্রেমে দেখে এক অদ্ভুত তৃপ্তিতে বাঁচেঅনেকে সত্যিই খুব ভাগ্যবতী হয়কোন উচ্চাশা বা
কেরিয়ারের চাপ এরা নেয় না বিয়েটাই জীবনে মূল লক্ষ্য,আর সব জাগতিক স্বাচ্ছন্দ্য মেটাতে একজন চওড়া
কাঁধওয়ালা স্বামী নামের পালিত জীব,যে সমস্ত বিল মেটাবে,বিনা প্রশ্নে,ভ্রু কুঞ্চিত না করেতাদের কারো কারো
এমন সুবোধ স্বামী জুটেও যায় এরা আলমারী ভর্তি শাড়ী,গা ভরা গয়না নিয়ে,শিব রাত্রিতে ঘটা করে উপোস,
বেলপাতায়,দুধে,জলে শিবঠাকুরকে ব্যতিব্যস্ত করে কৃতজ্ঞতা জানায়এদের যে নিজস্ব কোন পরিচিতি নেই,এরা 
 বিষয়ে একেবারেই ওয়াকিবহাল নয় মধ্যবিত্ত গৃহবধূদের এক বিশাল সংখ্যা,যারা প্রতিনিয়ত নিজেদের ছোট 
ছোট ইচ্ছে গুলোকে গলা টিপে মারছেন তাদের বহু চাহিদা,সখ কোনদিন পৃথিবীর আলো দেখতে পাচ্ছে না
মূলতঃ এদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না থাকাই এর প্রধান  একমাত্র কারণআসুন,নারীরা নিজেদের ভালবাসুন,
ইচ্ছেগুলোকে প্রাধান্য দিন।বছরের প্রতিটি দিনই ‘নারী দিবস’ হোক।নারীরা নিজেদের সম্মান করতে শিখলেই এ জগত সম্মান করবে।

মহাকাল আমার পদতলে
শায়িত চিরকাল---
আমি ছাড়া এ জগৎ সংসার---সবই হবে অচল
এই মূলমন্ত্র হয়ে উঠুক প্রতিটি নারীর।

মৌসুমী ভট্টাচার্য,ওমান

৮ই মার্চ ২০২০

3/related/default