Type Here to Get Search Results !

“চন্দনা” ..... বাংলাদেশ থেকে মনোয়ার মানিক এর কবিতা

চন্দনা


জাগ্রত চৌরঙ্গীর পাদদেশে দাঁড়িয়ে চব্বিশে চন্দনা
রাতের আকাশে মুঠো মুঠো ইচ্ছে গুলো উড়িয়ে দেয় বাতাসে
জীবনের দৈর্ঘ্য প্রস্থের হিসেব মেলায় পরিমিতির সুত্রের মতন
হঠাৎ তার চোখে শকুনের চোখ পরেচন্দনা হাত রাখে তার হাতে
তন্দ্রাহারা চোখশকুনের ভোগবড় অতিষ্ঠনির্লজ্জ
তবু অভিমান নেইঅভিযোগ নেইঅনুযোগ নেই
পুঁইয়ের ডগার মতন বেড়ে ওঠা থকথকে শরীর
বড় নালতে হয়ে যায়ভোরের আলো ওঠার আগেই
এক সময়রোজ সন্ধ্যায় চন্দনাও চুলে বেণী করতো হলুদ ফিতেয়
চুলে তেল চিটচিটে গন্ধখানিকটা বেয়ে পরত কপাল জুড়ে,
এখন সেই হলুদ ফিতে বাড়তে বাড়তেযেন ওড়না হয়ে গেছে
চুলে মেহেদীর ঘ্রাণশকুনের শোকে তেল চিটচিটে গন্ধও গেছে দূরে
ছোট বেলায় বউচি আর গোল্লাছুটে কেউ ছুঁতে পারেনি চন্দনার
ফুসফুস ভরা এক দম নিয়েদুউঠোন ঘুরে আবার নিজের ঘরে,
দুই যুগ পার হওয়া চন্দনাকেএখন যে কেউ ছুঁতে পারে
রাত ভর দুমড়ে মুচড়ে একাকারতারপর ভোরে ফেরে
শৈশবেআড়াই টাকার কলম বদলে নিয়েছিলো বলে
পঞ্চম শ্রেণীর সহপাঠীর সাথে একদিন কি ধ্বস্তাধস্তি,
চন্দনা এখন নিজেই বদল হয় রোজ রাতেসেই কলমের মতো
শুধু দামটা আড়াই টাকার একটু বেশীদর কষাকষি আর জবরদস্তি
মাঝে মাঝে তবু দুচোখ খুলে ভাসমান জীবনের গন্তব্য খোঁজে
খুব সাধ হয় ফিরে যেতেআলোর দেশে
গন্তব্যহীন জীবনকচুপাতার পানির মতন নড়বরে যৌবন
সব ভুলেসব ফেলে আবার ফিরে যাব নিজের অঙ্গন
চন্দনার অভাবচন্দনার সমাজধর্মদর্শনবিজ্ঞান......?
হঠাৎ থমকে দাড়ায়চন্দনার সামনেই বুঝি পুরু দেয়াল
দিনের আলো নিভে যায়সন্ধ্যা নামে পৃথিবীর বুকে
পায়ের নখে গোলাপী কুমকুমচোখের নীচের কালো দাগ ঢেকে
আজও চন্দনা বেড়িয়ে পরে নিঃশব্দে,
পৃথিবীর সমস্ত ধর্মপৃথিবীর সমস্ত সমাজদর্শনবিজ্ঞান
দুই পায়ের মাঝখানে ভাঁজ করে রেখেশকুনের খোঁজে
চন্দনা, আজও জাগ্রত চৌরঙ্গীর পাদদেশে আছে দাঁড়িয়ে...

মনোয়ার মানিক
বাংলাদেশ

২৪শে নভেম্বর ২০১৯  

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.