আমি এখনো অপেক্ষায় থাকি,
একটা ব্যস্ততম ঘড়ির দিকে তাকিয়ে,
নিজের জন্যে ছুটি খোঁজার অপেক্ষায়।শংখনাদ
২৬ বছর কেটেছে নিজেকে নিয়ে ভাবিনি,
শুধুই চোখের মূলে হিসেব কষেছি নিরন্তর,
আমার ব্যস্ততম ঘড়ির কাঁটা থেমে গেছে,
তখনই উপেক্ষার ছাউনিতে ঠাঁই পেলাম এক লহমায়।
এখন আর আক্ষেপে থাকি না করুণ দৃষ্টি নিয়ে,
মনে হয় দুর্বার গতিতে ছুটে যাই চির যৌবনের খোঁজে,
যে তারুণ্যের জং ধরা হাড় মাংসপেশির আবরণে চাপা,
যে যৌবনের শিরায় ফুটন্ত রক্ত আজ জমাট বেঁধে হিমায়িত,
সেই যৌবনের উদ্দীপনাহীন প্রাণ গুলোকে,
জেগে ওঠা আগ্নেয়গিরির প্রবাহিত লাভায় ভাসিয়ে দেই।
আজ তারুণ্যের প্রতিটি নিঃশ্বাসে আমি ভীরুতার গন্ধ পাই,
তার প্রতিটি পদাচরণ যেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলে,
তার ধ্বনিত চিৎকারে আজ সেই গর্জন পাই না,
শুনে মনে হলো তার কন্ঠের কুঠরী তে,
কেউ যেন জ্বলন্ত অঙ্গার চেপে দিয়ে পঙ্গুস্বরী করেছে।
তবে কী সভ্যতা ভয়ে মুখ লুকিয়ে নিয়েছে?
.
প্রবল বর্ষণে যেমন নদীর বুক উজার করে আসা বন্যা,
এক দুর্বার গতিতে ছুটে গিয়ে মোহনায় সাগরে মিশে,
তেমনি করে কেন তারুণ্যের বুকে ভীরুতা কাটিয়ে,
অদমনীয় সাহসিকতার বন্যা গতিশীল হয় না!
জং ধরা হাড়,মাংসপেশিতে হিমায়িত রক্তে শিকলে বাঁধা প্রাণগুলো;
কেন আগ্নেয়গিরির মতো জেগে ওঠে না!
ঝড়ে পড়া চোখের মূলে কেন জ্বলন্ত লাভার উত্তাপ অনুভূত হয় না!
যে সমাজ মিথ্যে দম্ভ অহংকার আর হটকারীতা নিয়ে দাপিয়ে চলেছে,
তারুণ্যের মনে নিপীড়নের উষ্ণ ভয়ের সঞ্চার করে চলেছে,
জিভের অগ্রভাগে অবসাদ আর নিস্ক্রিয়তা জাকিয়ে দিয়েছে,
আমার একুশের তারুণ্য কেন সেই সমাজের,
অগ্রগতির চাকা থামিয়ে আর একবার,
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের শঙখনাদ ধ্বনিত করছে না!
আমার একুশের তারুণ্য কেন গর্জে উঠছে না!
- চয়ন সাহা, ত্রিপুরা
২৪শে জানুয়ারি ২০২১