সদ্য ম্যাট্রিক পাশ মেয়েটি সেদিন মাকে বলেছিলো
"" আমার ভাষা কেড়ে নিতে চায় তারা '" ৷
চারিদিকে ফিসফিস চাপা একটা দীর্ঘশ্বাস ,
কারা যেন উদ্যত কন্ঠরোধ করতে ৷
""তারা জানে না মা ? বাহান্নোর কথা ,
রক্তে বাঁচিয়েছিল যারা ভাষা জননীকে
তাদের রক্তই বইছে ধমনীতে আমাদের "৷
""ভাত বেড়ে রেখো, এসে খাবো ,
তুমি ভেবোনা , যদি না আসি ফিরে
জেনে রেখো লক্ষ কমলাকে বাঁচাতে
তোমার মেয়ে শহীদ হলো আজিকে ৷
প্রান দেবো,তবুও তোমার বুকে
এতটুকু আঁচড় পরতে দেবো না ""।
ছুটে বেড়িয়ে পড়ে, লক্ষ্য রেলস্টেশন
পেছনে ছোটবোন মঙ্গলী দৌড়ে চলে ৷
বন্কিমের উপন্যাস রইলো পড়ে খোলা
রবিঠাকুরকেও তো পড়া হয়নি পুরো ৷
অসম্পূর্ণ লেখা খাতাটি আকাশ পানে ,
সাহিত্যে ভালোবাসতো মেয়েটি
স্বপ্ন বাংলার শিক্ষিকা হবে একদিন ৷
টাইপ শিখে অভাবের সংসারে একটু
ঠেকা দেওয়া উচিৎ মনে হয়েছে ৷
সেদিন ছিল ১৯শে মে, ১৯৬১ সাল
বাংলা ভাষা রক্ষার দাবিতে আন্দোলন
হঠাৎ কিছু বুঝে উঠার আগেই
পুলিশের বর্বরোচিত আক্রমণ
এগারো জনের রক্তাক্ত দেহ রাজপথে
সাথে ষোড়শী কমলা
রক্তে ভিজে যায় রেল স্টেশন চত্বর।
রক্তাক্ত কমলার চিৎকার যেন এখনও কানে বাজে,
"" ফিরে যা মঙ্গলী বোন আমার ,
মাকে বলিস, অস্তিত্ব আর অধিকারের
অন্য এক নাম চেতনার ঠিকানা ,
দিয়ে গেলাম আগামী নতুনের জন্য ""।
-সুস্মিতা দেবনাথ,ত্রিপুরা
১৯শে মে ২০২১