Type Here to Get Search Results !

রাজন্য স্মৃতিবিজড়িত ইতিহাস ও ঐতিহ্য হল রাজ্যের মূল শক্তি : মহারাজা বীর বিক্রমের জন্মজয়ন্তীতে মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি,আগরতলা,আরশিকথাঃ


মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর দেববর্মণ ছিলেন আত্মপ্রচারবিমুখ ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন এক মহান ব্যক্তিত্ব। রাজ্যবাসী হৃদয়ে মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের নাম উজ্জ্বল হয়ে আছে। আধুনিক ত্রিপুরা রাজ্যে প্রয়াস তিনি নিয়েছিলেন তা আজও আমাদের প্রেরণা দেয়। তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সমৃদ্ধশালী ও আত্মনির্ভর ত্রিপুরা নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। বৃহস্পতিবার তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর দেববর্মণের ১১৩ তম জন্ম জয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।



অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা, ত্রিপুরা স্ব-শাসিত জেলা পরিষদের সদস্য মহারাজা প্রদ্যুৎ কিশোর মানিক্য বাহাদুর দেববর্মণ, রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান সুভাষ দাস, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব পি কে গোয়েল ও অধিকর্তা রতন বিশ্বাস।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রীসহ অন্যান্য অতিথিরা মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর দেববর্মণের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। অনুষ্ঠানে রাজ্যের অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর দেববর্মণ ছিলেন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন এক বিচক্ষণ ব্যক্তিত্ব। আধুনিক ত্রিপুরা গড়ার ভাবনায় তাঁর নেতৃত্বে অল্প সময়ের মধ্যে ত্রিপুরাকে শিক্ষা সহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রভূত উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেন। তাঁর নির্দেশিত পথে হাঁটলে আরো আগেই শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা নির্মাণ করা সম্ভব হতো। বর্তমান সরকার তাঁর ভাবনায় আধুনিক ও সমৃদ্ধশালী ত্রিপুরা নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করছে। কিন্তু ভারতীয় বা রাজ্যের সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন একটি ভিন্ন মানসিকতাকে বিগত দিনে রাজ্যে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ত্রিপুরার প্রকৃত ইতিহাস বা রাজাদের অবদান সম্পর্কে জানার সুযোগ থেকে রাজ্যবাসীকে সুকৌশলে মুখ ঘুরিয়ে নেওয়ার একটা অপচেষ্টার লক্ষ্য করা গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার ত্রিপুরার উন্নয়নে মহারাজাদের যে অবদান ছিল তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কারণ আমরা বিশ্বাস করি ত্রিপুরার রাজন্য স্মৃতিবিজড়িত ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিই হলো রাজ্যের মূল শক্তি।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, মহারাজার প্রতি সম্মান জানানোর লক্ষ্যে একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মহারাজার জন্মজয়ন্তী দিনটিকে সরকারি ছুটি ঘোষণা, সরকারিভাবে মহারাজার জন্মজয়ন্তী পালনের উদ্যোগসহ আগরতলা বিমানবন্দরের নাম মহারাজা বীর বিক্রম কিশোরের নামে নামাঙ্কিত করা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমডিসি প্রদ্যুৎ বিক্রম কিশোর মানিক্য দেববর্মণ বলেন, অনেকেই মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরকে দেখাননি। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন আজও আমাদের মধ্যে বর্তমান।
মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য ত্রিপুরায় শিক্ষা ও পরিকাঠামো উন্নয়নে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ভারত ভাস্কর উপাধিতে সম্মানিত করাসহ ত্রিপুরার সাথে কবিগুরুর নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন তিনি। বিমানবন্দরসহ রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ত্রিপুরার উন্নয়নের রাজাদের ভূমিকাকে বিগত দিনে অস্বীকার করা হয়েছে। এমনকি উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের নাম পরিবর্তনেরও প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আজ সমগ্র রাজ্যব্যাপী মহারাজার জন্মজয়ন্তী পালনের মাধ্যমে তাঁর প্রতি প্রকৃত সম্মান জানানো হচ্ছে। তিনি মহারাজার স্বপ্নের ত্রিপুরা গড়তে সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য-সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব পি কে গোয়েল।


আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ



ছবিঃ সুমিত কুমার সিংহ

১৯শে আগস্ট ২০২১
 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.