Type Here to Get Search Results !

জাতীয় শিক্ষা নীতির সংশোধনী মাতৃভাষায় চর্চার ও শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সুনিশ্চিত করেছে : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি,আগরতলা,আরশিকথাঃ


মাতৃভাষার পাশাপাশি অন্যান্য ভাষার চর্চা অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হতে সহায়তা করে। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে জাতীয় শিক্ষা নীতির সংশোধনীর ফলে মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সুনিশ্চিত হয়েছে। বুধবার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত ৪৪তম ককবরক সাল-২০২২ শীর্ষক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে এই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। অনুষ্ঠানে ককবরক টিচার্স হ্যান্ডবুক, স্যুভেনির, ম্যাগাজজিন সহ আরও বেশ কিছু প্রকাশনার আবরণ উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ। এবারের ককবরক সাল উদযাপনের মূল ভাবনা হলো “মাতৃভাষাকে সম্মান জানাই''। শিক্ষা দপ্তরের অধীন ককবরক ভাষা ও অন্যান্য সংখ্যালঘু ভাষা অধিকার এবং জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের অধীন উপজাতি গবেষণা ও সংস্কৃতির কেন্দ্রের যৌথ ব্যবস্থাপনায় এদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।


অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ককবরক ভাষার প্রতি সম্মাননা স্বরূপ গন্ডাছড়ার নাম পরিবর্তন করে গন্ডাতুইসা এবং আঠারমুড়ার নাম পরিবর্তন করে হাচুক বেরেম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে ডম্বুর ভ্রমণের মাধ্যমে ও সড়ক পথে রাজ্যে আগত যাত্রীদের মাধ্যমে এই দুই জায়গার নতুন নামাকরণ অনায়াসে বিশ্ব আঙ্গিনায় পৌঁছে যাবে। মাতৃভাষার পাশাপাশি নিজস্ব কৃষ্টি সংস্কৃতির পরম্পরাকে সঙ্গে নিয়ে ককবরক ভাষাসহ অন্যান্য ভাষার চর্চা দ্বারা অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধতার পথ সুগম হয়। ককবরক ভাষা চর্চার প্রতি আরও আগ্রহী হওয়ার লক্ষ্যে সবার প্রতি আহ্বান রাখেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যত বেশি ভাষা রপ্ত করা যায় তত বেশি অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের সুযোগ তৈরি হয়। প্রধানমন্ত্রীর দিশা নির্দেশনায় জাতীয় শিক্ষা নীতির সংশোধনী মাতৃভাষায় চর্চার ও শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সুনিশ্চিত করেছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ সম। ত্রিপুরায় দেববর্মা, ত্রিপুরা, রিয়াং, জমাতিয়া, নোয়াতিয়া, কলই সহ বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর প্রায় আট লক্ষ মানুষ ককবরক ভাষায় কথা বলেন। বাঙ্গালীদের মধ্যেও অনেকেই ককবরক ভাষায় অভ্যস্ত। মনের ভাব প্রকাশের ভাষা যদি দুর্বল হয়ে যায় তা অত্যন্ত দুঃখজনক। সেদিকে লক্ষ্য রেখে বিভিন্ন ভাষা চর্চার প্রসারে গুরুত্ব আরোপ করেছে রাজ্য সরকার।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া বলেন, ত্রিপুরা সহ দেশের বাইরেও ককবরক ভাষা চর্চা বিদ্যমান। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লক্ষ মানুষ এই ভাষায় কথা বলে। এর এক গৌরব উজ্জ্বল অতীত রয়েছে। সমৃদ্ধ ককবরক ভাষায় বস্তুভেদে গণনা পদ্ধতিও অভিনব। রাজ্য সরকার ককবরক ভাষার প্রচার ও প্রসারে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। বাইশটি সাধারণ ডিগ্রী কলেজে ককবরক সহকারি অধ্যাপক নিয়োগ এর উদ্যোগ এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। প্রতি বছর ভালো সংখ্যায় ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ককবরক বিষয়ে মাস্টার ডিগ্রী সম্পন্ন করছেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ককবরক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান, বিধায়ক ডা অতুল দেববর্মা, ট্রাইবেল রিসার্চ এন্ড কালচারেল ইনস্টিটিউট এর অধিকর্তা আনন্দহরি জমাতিয়া, ককবরক ভাষা ও অন্যান্য সংখ্যালঘু ভাষা দপ্তরের অধিকর্তা দশরথ দেববর্মা প্রমুখ।

আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ

ছবিঃ সুমিত কুমার সিংহ
১৯শে জানুয়ারি ২০২২

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.