Type Here to Get Search Results !

আগরতলায় জমকালো ‘২য় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’ উদযাপনঃ ঢাকা রিপোর্ট

প্রভাষ চৌধুরী, ঢাকা, আরশিকথাঃ চোখ ধাঁধানো ও জমকালো আয়োজনে আগরতলায় ‘দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব-২০২২’ উদযাপন করা হয়েছে। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় পোলো টাওয়ারে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ ও আগরতলার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের ব্যবস্থাপনায় এবারের চলচ্চিত্র উৎসব ভিন্নমাত্রা পেয়েছে।
দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব, সম্মানিত অতিথি ছিলেন রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী শ্রী সুশান্ত চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, সংসদ সদস্য সাইমুম সারোয়ার কমল, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন। এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নয়াদিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনের উপ-হাইকমিশনার মো. নুরাল ইসলাম, ত্রিপুরা বিধানসভার সাবেক স্পিকার ও বিধায়ক শ্রী রেবতী মোহন দাস, চলচ্চিত্র অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ, অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস ও বাউল শিল্পী ফকির শাহাবুদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র উৎসবে।
বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। আলোচনার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ। তিনি তার বক্তব্যে ২য় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবের প্রেক্ষাপট তুলে ধরার পাশাপাশি ত্রিপুরাতে বাংলাদেশের সৃষ্টিশীল ও বহুল নন্দিত চলচ্চ্ত্রি সমুহকে বর্হিবিশ্বে তুলে ধরার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগকে স্বাগত জানান। ড. হাছান মাহমুদ তার বক্তব্যে বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশের এক কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল এবং বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকারের ফাঁসির আদেশের পর বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার জন্য তৎকালীন ভারত সরকার পৃথিবীর দেশে দেশে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছিল। ভারতের এ অবদান আমরা কখনো ভুলতে পারব না। ত্রিপুরার মানুষ তাদের রাজ্য এবং মনের দুয়ার দুটিই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় অবারিত করে দিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশ থেকে আসা লাখ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন, যা তারা বোঝা মনে করেন নাই। এ সময় ত্রিপুরার মানুষ এবং তৎকালীন রাজ্য সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরাকে নিয়ে আমার আবেগ এবং উচ্ছ্বাস রয়েছে। আমরা দুই দেশের মানুষ হলেও আমাদের ভাষা এক, সংস্কৃতিরও মিল রয়েছে। আমরা একই পাখির কলতান শুনি। ত্রিপুরার অনেকেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা অনেককেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হয়েছে উল্লেখ করে তাদের মধ্যে জীবিত এবং মৃত্যুবরণকারীদের পরিবারের সদস্যদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান হাছান মাহমুদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ‘বিশ্বে আজ বাংলাদেশের মানুষ বুক টান করে হাঁটে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ফলে দুই দেশের শত্রুরা কখনো সফল হতে পারবে না।
তিনি উভয় দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান প্রদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে চলচ্চিত্রের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উভয় দেশ ক্রমাগতভাবে উন্নতি লাভ করেছে এবং দুই দেশের সম্পর্ক উচ্চতর পর্যায়ে উপনীত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া তিনি বক্তব্যে বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের ত্রিপুরাতে বিনিয়োগের জন্য আহবান জানান। আলোচনা পর্ব শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জীবনের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র ‘Hasina- A Daughter Tale’ প্রদর্শিত হয়। ছবিটি উপস্থিত দর্শকদের অনুরোণিত করে এবং হলে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এরপর বাংলাদেশ থেকে আসা জনপ্রিয় বাউল শিল্পী ফকির শাহাবুদ্দিন এবং ত্রিপুরার বিশিষ্ট গীতিকার সুবিমল ভট্টাচার্য লিখিত ও অত্র মিশনের বিশেষ উদ্যোগে বাংলাদেশ নিয়ে লিখিত ‘সোনার বাংলা’ শিরোনামে এবং ১৯৭১ সালের পটভূমিতে রচিত ‘ও বুড়িগঙ্গা নদীরে’ গানের সমন্বয়ে পরিবেশিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠান শেষে আগরতলার পোলো টাওয়ারে অতিথি ও শিল্পীদের মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়।


আরশিকথা বাংলাদেশ

২৪শে ফেব্রুয়ারি ২০২২
 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.