শত্রু দেশকে জবাব দিতে সম্পূর্ণ স্বদেশী প্রযুক্তিতে একটি যুদ্ধ জাহাজ তৈরি করেছে ভারত। ‘মোরমুগাও’ নামের এই যুদ্ধ জাহাজ তার ক্ষেপনাস্ত্রের মাধ্যমে চোখের পলকে শত্রু সাবমেরিন ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। রবিবার এটিকে নৌসেনায় শামিল করবেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। চিনের সঙ্গে চলা সংঘাতে নৌসেনার এই শক্তিবৃদ্ধি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত মহাসাগরে নিজেদের গুপ্তচর জাহাজ পাঠিয়েছিল চিন। যা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে বিবাদ চরমে উঠেছে। এছাড়াও অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াঙ্গে চিনা সেনার সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর টক্কর নিয়ে চর্চা চলছে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে নৌসেনায় এই অত্যাধুনিক যুদ্ধ জাহাজ ভারতের শক্তি বৃদ্ধিতে একটি আলাদা মাত্রা যোগ করবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এই যুদ্ধ জাহাজটির নকশা তৈরি করেছে নৌসেনার ‘ওয়ারশিপ ডিজাইন ব্যুরো’। এটির নির্মাণ করেছে মুম্বইয়ের মঝগাঁও ডক শিপবিল্ডার্স লিমিটেড। ‘মোরমুগাও’ নামটি রাখা হয়েছে গোয়ার ঐতিহাসিক বন্দর শহরের নামে। গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর পর্তুগিজ শাসন থেকে গোয়ার স্বাধীনতার ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই জাহাজটিকে প্রথমবার সমুদ্রে ছাড়া হয়েছিল। প্রায় ১ বছর ধরে এটিকে পরীক্ষামূলক ভাবে চালানো হচ্ছিল। ভারতীয় নৌসেনা জানিয়েছে, এই যুদ্ধ জাহাজে একটি রিমোট সেন্সিং ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও অত্যাধুনিক রাডার এবং সার্ফেস-টু-সার্ফেস এবং সার্ফেস-টু-এয়ার মিসাইল রয়েছে। ‘মোরমুগাও’ ১৬৩ মিটার লম্বা ও ১৭ মিটার চওড়া। এর ওজন ৭ হাজার ৪০০ টন। ভারতের বানানো অন্যতম মারাত্মক যুদ্ধ জাহাজের তালিকায় এটি শামিল হয়েছে। এই জাহাজটি ৪টি শক্তিশালী গ্যাস টার্বাইন দ্বারা চালিত হয়। ৩০ নটের বেশি গতিতে এটি চলতে সক্ষম। নৌসেনা জানিয়েছে, অ্যান্টি সাবমেরিন প্রযুক্তি সম্পূর্ণ ভাবে ভারতেই তৈরি হয়েছে। এই জাহাজে রকেট লঞ্চার, টর্পেডো এবং ‘এসএডব্লিউ’ হেলিকপ্টার রয়েছে। এই জাহাজটি পারমাণবিক, জৈবিক এবং রাসায়নিক যুদ্ধে লড়তে সক্ষম। ভারত মহাসাগরে কড়া নজরদারি চালাতে তৎপর কেন্দ্র। সে জন্য নৌসেনার শক্তি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। ভারতীয় নৌসেনা আরও জানিয়েছে, এই জাহাজের প্রায় ৭৫ শতাংশ সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। দেশকে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ লক্ষ্যে নিয়ে যেতে তৎপর নৌসেনা। স্বদেশী প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৪৪টি জাহাজ ও সাবমেরিনের মধ্যে ৪২টি জাহাজই ভারতের শিপইয়ার্ডগুলিতে তৈরি হচ্ছে। এছাড়াও আরও ৫৫টি জাহাজ ও সাবমেরিন তৈরির বরাত দেওয়া রয়েছে। সেগুলিও ভারতেই তৈরি হবে।
আরশিকথা দেশ-বিদেশ
ছবি ও তথ্যঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট
১৭ই ডিসেম্বর ২০২২