বাঙ্গালী তথা ভারতীয় জাতিসত্তার উদ্গাতা, বাংলার নবজাগরণের অন্যতম অগ্রদূত, জাতীয়তাবোধের বীজমন্ত্র' বন্দে মাতরম ' সংগীত এর মহান স্রষ্টা সাহিত্যসম্রাট ঋষি বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের (১৮৩৮....১৮৯৪) জন্মশহর নৈহাটির ঐকতান প্রেক্ষাগৃহের সমরেশ বসু কক্ষে ১৪ মার্চ আয়োজিত হয়েছিল এক মহতী অনুষ্ঠান, যার শিরোনাম ছিল, 'বঙ্কিম স্মরণ ও কবিতা মজলিশ'| আয়োজক - বঙ্কিম পরম্পরা, কোলকাতা।
সুন্দর সঞ্চালনায় ছিলেন দিল্লীপ্রবাসী বিশিষ্ট বাচিকশিল্পী মৌলী গাঙ্গুলী ভট্টাচার্য | অনুষ্ঠানের স্বাগত ভাষণ দেন, বঙ্কিম পরম্পরার সম্পাদক, ঋষি বঙ্কিম পরিবারের পঞ্চম প্রজন্ম, কবি জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন শুধু মনীষীদের জন্ম ও মৃত্যু দিবস পালন নয়, তাঁদের জীবন, সংগ্রাম, সাধনা, ভাবাদর্শ ও স্বপ্ন নিয়ে কাজ করতে হবে আমাদের। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরে দিতে হবে মূল্যবোধ ও মানবিকতার শিক্ষা। আমাদের ঐতিহ্য ও পরম্পরার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে আমাদের। আমরা আধুনিক প্রগতির পক্ষে কিন্তু গৌরবময় অতীত ভুলে নয়।
জাতীয় স্তোত্র 'বন্দে মাতরম' সংগীত এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানের নান্দনিক শুভ সূচনা করেন নমিতা সেন ও দূর্বদল বিশ্বাস। এর পর ভারতের জাতীয় পতাকা ও ঋষি বঙ্কিমচন্দ্রের স্মৃতির প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা- সম্মান জ্ঞাপন করা হয়।
বিশেষ অতিথি বরিষ্ঠ লেখক ও গবেষক পার্থসারথি গায়েন আলোচনা করলেন বঙ্কিমচন্দ্রের ধর্ম ও মানবিকতা, অধ্যাপিকা ড. দেবযানী ভৌমিক চক্রবর্তীর আলোকপাত ছিল বঙ্কিম উপন্যাসে নারী, প্রাবন্ধিক স্নেহাশিস চক্রবর্তী আলোচনা করলেন বঙ্কিম বাবুর সময়কাল ও তাঁর অস্মিতা নিয়ে , কবি ফাল্গুনী ঘোষের আলোচনায় উঠে এলো বেদান্ত, কর্মযোগ ও বঙ্কিমচন্দ্র ।
বাচিক শিল্পী রঞ্জনা কর্মকারের আবৃত্তি মন কাড়লো, বঙ্কিমচন্দ্রের কালজয়ী উপন্যাস দূর্গেশনন্দিনীর বিশেষ অংশ পাঠে ছিলেন শ্রদ্ধেয়া আবৃত্তিকার চন্দনা দাস | জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় এর মূল রচনায়, প্রখ্যাত কণ্ঠ প্রজ্ঞা পারমিতার সংকলন ও উচ্চারণে 'বন্দেমাতরমের 'ওপর শ্রদ্ধার্ঘ্য- কোলাজ ছিলো মনোময় উপস্থাপনা। বিশিষ্ট বাচিকশিল্পী বিপ্লব চক্রবর্তীর আবেগময় কণ্ঠর পরিবেশনা মনে দাগ কাটে |
আমন্ত্রিত উপস্হাপনায় শিশু ও কিশোর শিল্পীরা বঙ্কিমচন্দ্র, স্বদেশ ও স্বাধীনতা বিষয়ক আবৃত্তি পরিবেশন করে | রাখী ভট্টাচার্যের পরিচালনায় শ্রুতিকথা, স্বাগতা মন্ডল মল্লিকের পরিচালনায় হালিশহর কথামালা, প্রজ্ঞা পারমিতার পরিচালনায় কিরণ্যা অনবদ্য কথা ও কবিতার কোলাজে ভরিয়ে তোলে সভাকক্ষ।