১০ জানুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ও আনন্দের দিন, প্রকৃতপক্ষে বিজয়ের পূর্ণতা প্রাপ্তির দিন। ১৯৭২ সালের এই দিনে বাংলাদেশের মহান মুক্তি সংগ্রামের মহানায়ক স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ নয় মাস ১৪ দিন পর পাকিস্তানের অন্ধকার কারা প্রকোষ্ঠ থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন মাতৃভূমিতে সগৌরবে ও বীরদর্পে প্রত্যাবর্তন করেন।
ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন’’ দিবসকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশন বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এদিন বিকাল ০৩:৩০ ঘটিকায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। সকাল ০৩:৩৫ ঘটিকায় দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে অত্র মিশনের প্রথম সচিব জনাব মোঃ রেজাউল হক চৌধুরী এবং অত্র মিশনের প্রথম সচিব জনাব মোঃ আল আমীন।
সহকারী হাইকমিশনার জনাব আরিফ মোহাম্মাদ তাঁর সমাপনী বক্তব্যে বলেন দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করলেও বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া সেই বিজয় ছিল অপূর্ণ ও অতৃপ্ত। তিনি বলেন, সেদিন ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু সসম্মানে, মাথা উচু করে, বীরের বেশে স্বাধীন দেশে ফিরে আসেন, দেশ ফিরে পায় তাঁর প্রিয় কিংবদন্তী সন্তানকে, জাতি ফিরে পায় তাঁদের মহান নেতা জাতির স্থপতি’ বঙ্গবন্ধুকে। মুক্ত স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধুকে ফিরে পেয়ে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বিজয়ী বাঙ্গালী জাতি অনুভব করে বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ। সহকারী হাইকমিশনার বলেন, দেশ বিরোধী চক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশের উন্নয়নের পথ রোধ করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন ধ্বংস করতে পারেনি। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের সোপান বেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সহকারী হাইকমিশনার জনাব আরিফ মোহাম্মাদ তাঁর সমাপনী বক্তব্যে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতা, ৩০ লাখ শহিদ, সম্ভ্রম হারা ২ লাখ মা - বোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বতোভাবে সহযোগিতার জন্য ভারতের জনগণ, ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী তথা ভারত সরকার, মিত্র বাহিনী, সংস্কৃতিকর্মী, সংবাদকর্মী, বুদ্ধিজীবী সহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় ভারতের অংশীদারিত্বের উপর আলোকপাত করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিপুরাবাসী বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের জন্য যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিল তাও কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। তাছাড়া তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের এই মাহেন্দ্রক্ষণে আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি- দেশ-বিদেশী সকল যড়যন্ত্র প্রতিহত করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ’’ তথা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ’’ বিনির্মাণে কার্যকরি ভূমিকা রাখবো।
প্রথম সচিব জনাব মোঃ আল আমীন আগত সকল অতিথিদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যম অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করেন। অনুষ্ঠান শেষে ০৫:৩০ ঘটিকায় আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের সন্মানে আপ্যায়নের আয়োজন করা হয়।আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
১০ জানুয়ারি ২০২৩